ব্যাকরণ ও নির্মিতি >>
শব্দার্থ ।।
• সংগ্রাম >> যুদ্ধ
• বিরত >> ক্লান্ত
• স্বপক্ষীয় >> নিজে
পক্ষের
• মুর >> আফ্রিকার কালো
মুসলমান জাতিবিশেষ
• শিবির >> অস্থায়ী
বাসস্থান
• শিবির সন্নিবেশ স্থানে
>> যেখানে শিবির স্থাপন করা হয়েছে
• পট মণ্ডপ দ্বারে >>
তাঁবুর প্রবেশ পথে
• অণুমাত্র >> সামান্যতম
• বিদ্বেষ প্রদর্শন >>ঘৃণার
প্রকাশ
• পরিচর্যা >> যত্নআত্তি
• তৎক্ষণাৎ >> সেই
মুহূর্তে প্রকাশ
• প্রার্থিত >> চাওয়া
হয়েছে এমন
• ক্ষুৎপিপাসা >> খিদে ও
পিপাসা
• অভিভূত >> আচ্ছন্ন;
বিহ্লব
• উদ্যোগ >> আয়োজন
• ক্ষুন্নিবৃত্তি >> খিদে
মেটানো
• উপবিষ্ট >> বসা
• স্বীয় >> নিজের
• বিবর্ণ >> ফ্যাকাশে
• গাত্রোত্থান >> উঠে পড়া
• প্রত্যুষ >> ভোরবেলা
• সত্বর >> তাড়াতাড়ি
• আনুকুল্য >> সহায়তা
• মর্মগ্রহ >> অর্থ বুঝতে
পারা
• সন্দিহানচিত্যে >>
সন্দেহ মনে
• মুখ প্রক্ষালনাদি >>
মুখ ধোয়া ইত্যাদি
• মুখরাশি >> লাগাম
• যৎকালে >> যে সময়ে
• প্রাণহন্তা >> প্রানহত্যাকারী
• বৈরসাধন >>শত্রুর প্রতি
প্রতিহিংসা পালন
• অনিষ্টচিন্তা >>ক্ষতি
করার চিন্তা
• অপগত >> দূরীভূত; দূর
হওয়া
• প্রাণসংহার >> হত্যা
• প্রবিষ্ট >> প্রবেশ
• প্রতিগমন >> ফিরে যাওয়া
বিপরীত শব্দ ।।
• শত্রু >> মিত্র
• অনাদর >> আদর
• আশ্রয় >> নিরাশ্রয়
• উপবিষ্ট >> দণ্ডায়মান
• স্বীয় >> পরস্ব
• প্রস্থান >> প্রবেশ
• অতিশয় >> সামান্য
• সন্দিহান চিত্তে >> নিঃসন্দিগ্ধচিত্যে
• রজনী শেষে >> দিবাশেষে
• আরোহণ >> অবরোহণ
• বিপক্ষশিবির >>
স্বপক্ষশিবির
• পূর্বপুরুষ >>
উত্তরপুরুষ
• সূর্যদয় >> সূর্যাস্ত
• বিল্মব >> সত্বর
• আগ্রহ >> অনাগ্রহ
• সফল >> নিস্ফল
• নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও
প্রশ্ন ॥> ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোন কলেজের
অধ্যক্ষ ছিলেন।
উত্তর ॥> ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।
প্রশ্ন ॥> তার
রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখ
উত্তর ॥>
ইশ্বরচন্দ্র রচিত দুটি গ্রন্থ হল বোধোদয় ও কথামালা
• নিচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও
প্রশ্ন ॥> ‘অদ্ভুত
আতিথেয়তা’ গল্পে কোন কোন সেনাপতির প্রসঙ্গ রয়েছে
উত্তর ॥> আরব
সেনাপতি ও মুর সেনাপতি প্রসঙ্গ রয়েছে ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে
প্রশ্ন ॥> “তিনি এক আরব সেনাপতির
পটমণ্ডপদ্বারে উপস্থিত হইয়া আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন” –
উদ্ধৃতাংশে ‘তিনি’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে
?
উত্তর ॥> উদ্ধৃতাংশে তিনি হলেন একজন
মুরসেনাপতি।
প্রশ্ন ॥> উভয়
সেনাপতির কথোপকথন হইতে লাগিল। - উভয় সেনাপতি বলতে এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর ॥> উভয়
সেনাপতি বলতে এখানে মুর সেনাপতি ও আরব সেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন ॥> “তাহা হইলে
আমাদের উভয়ের প্রাণরক্ষার সম্ভাবনা”।
-- প্রাণরক্ষার কোন
উপায় বক্তা এক্ষেত্রে বলেছেন?
উত্তর ॥>
সূর্যোদয়ের পূর্বে মুরসেনাপতির ঘোড়ার দ্রুতবেগে আরব সেনাদের শিবির ছেড়ে
নিজ পক্ষের শিবিরে পৌঁছাতে পারার উপায়ের কথা বক্তা বলেছেন।
প্রশ্ন ॥> “আপনি সত্বর প্রস্থান করুন” - বক্তা কেন উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে সত্বর প্রস্থান করার নির্দেশ দিলেন?
উত্তর ॥> আরব
সেনাপতি মুরসেনাপতিকে ‘সত্বর প্রস্থান’ করা নির্দেশ দিলেন, তা না হলে তার পিতার হত্যাকারী মুরসেনাপতিকে হত্যা করার সুযোগ তিনি পেয়ে
যেতে পারেন।
• নিচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখ উত্তর।
প্রশ্ন ॥> “তাহার দিকভ্রম জন্মিয়াছিল” - এখানে কার কথা বলা হয়েছে? দিকভ্রম হওয়ার পরিণতি
কি হলো?
উত্তর ॥> আরব
সেনাদের তাড়া খেয়ে পালালো এক
মুরসেনাপতির কথা এখানে বলা হয়েছে।
॥> দিকভ্রম হওয়ার ফলে মুরসেনাপতি নিজপক্ষের শিবিরে পৌঁছানোর পরিবর্তে
শত্রুপক্ষ আরব সেনাদের শিবিরে গিয়ে উপস্থিত হয়।
প্রশ্ন ॥> “আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোন জাতি আরবদিগের তুল্য নহে” - এই বক্তব্যের সমর্থনে গল্পে কিভাবে খুজে পেলে?
উত্তর ॥> একে তো মুর জাতি আরব জাতির শত্রু পক্ষ তার উপর মুর সেনাপতি ছিলেন আরব সেনাপতির পিতার হত্যাকারী। তা সত্ত্বেও খিদে-তৃষ্ণায় কাতর ক্লান্ত অবসন্ন মুর সেনাপতির প্রতি
অতিথিপরায়ণতার যে নিদর্শন আরব সেনাপতি দেখিয়েছেন তা এককথায়
অতুলনীয়। মুর সেনাপতিকে খাদ্য, পানীয়,
বিশ্রাম ও আশ্রয় দিয়েছেন এবং পরদিন নিরাপদে নিজের শিবিরে পৌঁছানোর জন্য দ্রুতগামী ঘোড়া দিয়েছেন আরব সেনাপতিকে।
প্রশ্ন ॥> “সহসা আরব সেনাপতির মুখ বিবর্ণ
হইয়া গেল” - আরব সেনাপতির মুখটা বিবর্ণ হয়ে ওঠার কারণ কি?
উত্তর ॥>
ক্লান্ত এবং ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর মুর সেনাপতি আরব সেনাপতির আতিথ্যে কিছুটা সুস্থ বোধ করলে
দুজনে বসে কথা বলতে থাকেন। কথা বলার মাঝেই আরব সেনাপতি বুঝতে
পারেন যে তাঁর সামনে বসে থাকা মুরসেনাপতিই তার পিতার হত্যাকারী। এই কারণে আরব সেনাপতির মুখ
হঠাৎই বিবর্ণ হয়ে ওঠে।
প্রশ্ন ॥> “সন্দিহান চিত্তে শয়ন করিলেন” - এখানে কার মনের সন্দেহের কথা বলা হয়েছে? তার মনের
এই সন্দেহের কারণ কি?
উত্তর ॥> এখানে সেনাপতির মনের কথা বলা হয়েছে।
॥> খাদ্য-পানীয় বিশ্রামলাভে কিছুটা ক্লান্তি
দূর হলে মুরসেনাপতি আরবসেনাপতির সঙ্গে
কথাবার্তা বলতে থাকেন। কিন্তু হঠাৎই আরব সেনাপতি বিবর্ণ মুখে
সে স্থান ত্যাগ করে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে
তিনি লোক দিয়ে খবর পাঠান যে তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। তাই নিজে উপস্থিত থেকে অতিথির পরিচর্যা করতে অক্ষম।
মুর সেনাপতি যেন খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন। পরদিন সকালে তার
জন্য দ্রুতগামী ঘোড়া প্রস্তুত থাকবে। মোর সেনাপতি যাতে
তাড়াতাড়ি তার শিবিরে পৌঁছাতে পারেন তার সবরকম সহযোগিতা আরব সেনাপতি করবেন। আরব সেনাপতির এরূপ সংবাদ পাঠানোর জন্যই মুরসেনাপতির মনে সন্দেহ দানা বেঁধে ওঠে।
প্রশ্ন ॥> “তাহার অনুসরণ করেছিল” – কে, কাকে অনুসরণ করেছিলেন?
তার এই অনুসরণের কারণ কি?
উত্তর ॥> আরব সেনাপতি মুর সেনাপতি কে অনুসরণ করেছিলেন। মুরসেনাপতি
আরব সেনাপতির জাতিশত্রু। শুধু তাই নয়
তার পিতার হত্যাকারীও। কিন্তু মুরসেনাপতি
আরব সেনাপতির কাছে আশ্রয় ও খাদ্য-পানীয় চাওয়ায় তাঁর
অতিথিতে পরিণত হয়েছিলেন। আরবদের অতিথি
পরায়ণটা পৃথিবীবিখ্যাত। তাই অতিথির কোনরকম
ক্ষতি করতে পারেননা আরব সেনাপতি। কিন্তু পরদিন সকালে মুরসেনাপতি নিজ পক্ষের শিবিরে ফেরার জন্য যাত্রা করলে
আরব সেনাপতির কাছে আতিথ্যের দায় আর
থাকে না। তাই পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তিনি
মুরসেনাপতি অনুসরণ করেছিলেন।
• প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্ন ॥> “যাহাতে আপনি সত্বর প্রস্থান করিতে পারেন,
তদ্ বিষয়ে যথোপযুক্ত আনুকূল্য করিব”।
উত্তর ॥> ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরবসেনাপতি তার জাতির শত্রু ও তার পিতার
হত্যাকারী এক মুরসেনাপতিকে লোক
পাঠিয়ে এই কথাটি বলে পাঠিয়েছিলেন। জাতির শত্রু হলেও আশ্রয় ও খাদ্য পানীয় প্রার্থী মুরসেনাপতিকে ফেরাননি আরবসেনাপতি।
যত্নসহকারে খাদ্য, পানীয় ও বিশ্রামের
ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সামান্য সুস্থ হলে তার মুখোমুখি
বসে বন্ধুর মতো আলাপ- আলোচনাও করেন। সেই সময় আরবসেনাপতি জানতে পারেন যে মুরসেনাপতিই তার পিতার হত্যাকারী। এ কথা শুনে মন খারাপ হওয়ায়
তিনি সেখান থেকে চলে গেলেও অতিথিসেবার কোনরকম ত্রুটি রাখেনি।
প্রতিশোধ নেওয়ার পরিবর্তে নিরাপদে মুরসেনাপতিকে নিজ পক্ষের শিবিরে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা
করে দিয়েছেন। এর দ্বারা আরব জাতির অতিথি পরায়নতার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়।
প্রশ্ন ॥> “এই বিপক্ষ শিবির-মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর বিপক্ষ আর নাই” –
উত্তর ॥> ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরব সেনাপতি তার পিতার হত্যাকারী শত্রু পক্ষের মুরসেনাপতি কে একথা বলেছেন। রাত্রে পরম আতিথেয়তা
দানের পর খুব সকালে এক দ্রুতগামী ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে বিদায় দেওয়ার সময় তাকে একথা বলেছিলেন আরবসেনাপতি। আরব জাতির কাছে অতিথিসেবা সর্বশ্রেষ্ঠ
ধর্ম। তাই শত্রু জেনেও আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে খাদ্য-পানীয়
বিশ্রামের সুযোগ ও আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু
উভয়ের কথাবার্তা চলাকালীন তিনি জানতে পারেন যে মুরসেনাপতি
তাঁর পিতার হত্যাকারী। অতিথি অবধ্য হলেও আতিথ্য কাল
পার হয়ে গেলে তিনি মুর সেনাপতির চরম শত্রু
হয়ে উঠবেন তা জানতে ভুল করেননি আরব সেনাপতি। এই উক্তির মধ্য
দিয়ে একজন অতিথিবৎসল মানুষের মধ্যে পিতার হত্যাকারীকে শাস্তি দেওয়ার একান্ত
ইচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে।
প্রশ্ন ॥> “আমাদের জাতীয় ধর্ম এই প্রাণান্ত সর্বস্বান্ত হলেও অতিথির
অনিষ্ট চিন্তা করিনা”
উত্তর ॥> ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে রাত্রে মুর সেনাপতিকে অতিথি হিসাবে সেবা করার
পর ভোরবেলায় তাকে বিদায় সম্ভাষণ জানানোর সময় আরব সেনাপতি একথা বলেছিলেন। অতিথি সেবার ক্ষেত্রে আরব জাতি পৃথিবীতে অতুলনীয়।
অতিথি হিসাবে কেউ আরবদের কাছে আশ্রয় চাইলে নিজের সর্বস্ব দিয়ে আরবরা তার সেবা করে। চরম শত্রু হলেও এর অন্যথা হয় না।
আলোচ্য গল্পে জাতির শত্রু জেনেও আরব সেনাপতি
মুর সেনাপতিকে অতিথি হিসেবে সেবা করেছেন। এমনকি তার পিতার
হত্যাকারী জেনেও অতিথিসেবা থেকে সরে আসেননি। এর কারণ হিসেবে আরব সেনাপতি মুরসেনাপতিকে বিদায় দেওয়ার সময় আপন জাতির এই মহত্ব সম্বন্ধে উক্ত
মন্তব্যটি করেন।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজের ভাষায় লেখ
প্রশ্ন ॥> গল্পে কার আতিথেয়তার কথা রয়েছে? তিনি কীভাবে অতিথির আতিথেয়তা করেন? তার সেই আতিথেয়তাকে অদ্ভুত আখ্যা দেওয়া হয়েছে
কেন?
উত্তর ॥> জনৈক আরব সেনাপতির
আতিথেয়তার কথা গল্পে রয়েছে।
॥> যুদ্ধক্লান্ত ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর এক মুরসেনাপতি
ভুল করে শত্রুপক্ষ আরব সেনাপতির শিবিরে
এসে খাদ্য-পানীয় ও বিশ্রাম প্রার্থনা করেন। আরব সেনাপতি মুর সেনাপতিকে খাদ্য, পানীয় ও আশ্রয় দান করেন। পরদিন সকালে নিজ পক্ষের
শিবিরে মুরসেনাপতি যাতে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে
পারেন সেজন্য তাকে সুসজ্জিত দ্রুতগামী ঘোড়ার পিঠে তুলে দিয়ে বিদায় সম্ভাষণ
জানান।
॥> প্রায় সব দেশেই সব জাতির মধ্যে অতিথি সেবার প্রবণতা
কমবেশি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু পিতার
হত্যাকারী জেনেও আরবসেনাপতি মুরসেনাপতির আতিথেয়তায় বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি। ইচ্ছা করলেই তিনি মুরসেনাপতিকে আশ্রয় দিয়ে সেই রাতে হত্যা করতে
পারতেন। কিন্তু তা না করে আতিথ্য ছেড়ে শিবিরে ফিরে যাওয়ার
সময় মুরসেনাপতির পিছু নিয়েছেন তাকে
শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে। এ জন্যই তার আতিথেয়তাকে ‘অদ্ভুত’ আখ্যা দিয়েছেন লেখক।
প্রশ্ন ॥> আরব-মুর সংঘর্ষের ইতিহাসশ্রিত কাহিনী
অবলম্বনে রচিত এই আখ্যানে লেখকের রচনাশৈলীর অনন্যতার পরিচয় দাও?
উত্তর ॥> ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তার ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পটিতে ইতিহাসের অনুষঙ্গ জুড়ে
দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তার রচনাশৈলীর অনন্যতায় তিনি গল্পটিতে প্রাচীন সময়কালের ছবি এঁকেছেন অনবদ্য শিল্প
সুষমায়। বিদ্যাসাগরকে সাধু গদ্যের জনক বলা হয়। সন্ধি বহুল
তৎসম শব্দের ব্যবহারে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। প্রাচীন
সময় কালের কাহিনী বর্ণনার জন্য এধরনের ভাষার
ব্যবহার যথোপযুক্ত হয়েছে। তাঁবুর বর্ণনা, পাহারার ব্যবস্থা, লড়াইয়ের খুঁটিনাটি বর্ণনা, মুর সেনাপ্তিকে আরব সেনাদের তাড়া কিংবা আরব সেনাপতি কর্তৃক তার পিছু নেওয়া খুবই দক্ষতার সঙ্গে লেখক বর্ণনা করেছেন।
বিদ্যাসাগরের অনন্য রচনাশৈলীর মাধ্যমে অতীত ইতিহাসের ছেঁড়া পাতা জীবন্ত হয়ে উঠেছে
পাঠকের চোখের সামনে । অল্প পরিসরে প্রধান দুটি
চরিত্রের কোন নাম লেখক আমাদের বলেননি। আসলে তিনি মানবজাতির
মানবধর্ম সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন এই ছোট গল্পের মাধ্যমে। এখানেই তাঁর অনন্যতা।
প্রশ্ন ॥> আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীর কোন জাতিই আরবদিগের তুল্য নহে” - গল্পের ঘটনা বিশ্লেষণ করে মন্তব্যটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।
উত্তর ॥> যুদ্ধক্লান্ত ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর এক মুরসেনাপতি
ভুল করে শত্রুপক্ষ আরব সেনাপতির শিবিরে
এসে খাদ্য-পানীয় ও বিশ্রাম প্রার্থনা করেন। আরব সেনাপতি মুর সেনাপতিকে খাদ্য, পানীয় ও আশ্রয় দান করেন। পরদিন সকালে নিজ পক্ষের
শিবিরে মুরসেনাপতি যাতে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে
পারেন সেজন্য তাকে সুসজ্জিত দ্রুতগামী ঘোড়ার পিঠে তুলে দিয়ে বিদায় সম্ভাষণ
জানান।
প্রায় সব দেশেই সব জাতির মধ্যে অতিথি সেবার প্রবণতা কমবেশি লক্ষ্য করা
যায়। কিন্তু পিতার হত্যাকারী জেনেও আরবসেনাপতি মুরসেনাপতির আতিথেয়তায় বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি। ইচ্ছা করলেই তিনি মুরসেনাপতিকে আশ্রয় দিয়ে সেই রাতে হত্যা করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে
আতিথ্য ছেড়ে শিবিরে ফিরে যাওয়ার সময় মুরসেনাপতির পিছু নিয়েছেন তাকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে। এ জন্যই তার আতিথেয়তাকে ‘অদ্ভুত’ আখ্যা দিয়েছেন লেখক। তাই উদ্ধৃত মন্তব্যটির যথার্থতা সহজেই অনুমান করা যায়।
প্রশ্ন ॥> বন্ধুভাবে উভয় সেনাপতির কথোপকথন হইতে লাগিল” – কোন দুই সেনাপতির কথা এখানে বলা হয়েছে? তাদের কিভাবে
সাক্ষাৎ ঘটেছিল? উভয়ের কথোপকথনের সারমর্ম নিজের ভাষায়
আলোচনা করো।
উত্তর ॥> ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের মুরসেনাপতি ও আরবসেনাপতির কথা এখানে বলা হয়েছে।
॥> আরব জাতির সঙ্গে মুরদের যুদ্ধ চলাকালীন আরবসেনারা জনৈক মুর সেনাপতিকে বহুদূর
পর্যন্ত তাড়া করে নিয়ে যায়। তাড়া খেয়ে মুর সেনাপতি পথ ভুলে নিজপক্ষের শিবিরের পরিবর্তে শত্রুপক্ষ আরব শিবিরে এসে উপস্থিত হয়।
আরব সেনাপতি কাছে গিয়ে ক্লান্ত এবং ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর মুর
সেনাপতি আশ্রয় প্রার্থনা করেনন।
॥> অতিথিবৎসল আরবসেনাপতি শত্রুতা ভুলে যত্ন সহকারে
অতিথিসেবায় মন দেয়। খাদ্য, পানীয় ও বিশ্রাম পেয়ে
মুরসেনাপতি কিছুটা সুস্থ বোধ করলে দুই সেনাপতি বন্ধুর মতো
গল্প করতে থাকেন। দুজনে দুজনের পূর্বপুরুষ দের
পূর্বপুরুষদের সাহসিকতা ও বীরত্বের কাহিনী শোনাতে থাকেন।
এইসব কথা প্রসঙ্গে আরব সেনাপতি জানতে পারেন যে এই মুরসেনাপতিই তার পিতার হত্যাকারী। এ কথা জেনে তিনি অসুস্থ বোধ করেন কারণ শত্রু হলেও আরব
জাতির কাছে অতিথি অবধ্য। তাই তিনি
আলোচনাস্থল থেকে উঠে চলে যান।
প্রশ্ন ॥> “তিনি নির্বিঘ্নে স্বপক্ষীয় শিবিরসন্নিবেশ
স্থানে উপস্থিত হইলেন” - কার কথা বলা
হয়েছে? কিভাবে তিনি স্বপক্ষীয় শিবিরে নির্বিঘ্নে
পৌঁছেছিলেন? তার জীবনের এই ঘটনার পূর্ব রাত্রের
অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।
উত্তর ॥> বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে জনৈক মুর সেনাপতির কথা এখানে বলা হয়েছে।
॥> আরব সেনাপতি মুর সেনাপতিকে একটি সুসজ্জিত
দ্রুতগামী ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে তাকে খুবই দ্রুত ঘোড়া ছুটিয়ে
চলে যেতে বলেন। মুরসেনাপতি রওনা
দেওয়ার কিছু সময় পর আরব সেনাপতি নিজেও একটি দ্রুতগামী ঘোড়ায় চেপে তাকে ধরার জন্য তার পিছু নেন। কিন্তু কিছুটা সময় আগে
যাত্রা শুরু করায় মুরসেনাপতি নির্বিঘ্নে নিজের পক্ষের শিবিরে পৌঁছান। আরব
সেনাপতি তার নাগাল পান না।
॥> নিজের পক্ষের শিবিরে পৌঁছানর আগের রাত ছিল
মুর সেনাপতির জীবনে এক স্মরণীয় রাত। আরব সৈন্যদের তাড়া খেয়ে
তিনি পালাতে থাকেন।
কিন্তু তাদের হাত থেকে
রক্ষা পেলেও তিনি পথ হারিয়ে ফেলেন এবং ভাগ্যের
পরিহাসে ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত অবস্থায় আরবদের সেনাপতির শিবিরেই এসে উপস্থিত হন। আরব
জাতির অতুলনীয় আতিথেয়তার কারণে তিনি খাদ্য, পানীয়, বিশ্রাম লাভে অনেক আরাম বোধ
করেন। তখন আরব সেনাপতি তার সঙ্গে বন্ধুর মতো আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন।
উভয়ে নিজ নিজ পূর্বপুরুষদের বীরত্বের কাহিনী আলোচনার সময় আরব সেনাপতি
জানতে পারেন যে এই মুরসেনাপতিই তার
পিতার হত্যাকারী। আরব সেনাপতি সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে উঠে
চলে যান এবং লোক দিয়ে খবর পাঠান যে তিনি অসুস্থ বোধ করছেন।
তিনি মোর সেনাপতির রাতে থাকা ও খাওয়ার সুবন্দোবস্ত করেছেন।
তবে পরদিন সূর্য ওঠার আগেই যাতে তিনি সেখান থেকে চলে যেতে পারেন তার জন্য ঘোড়া
প্রস্তুত থাকবে। আর তিনিও সেসময় মুরসেনাপতির
সঙ্গে দেখা করবেন। এই কথা শুনে মুর সেনাপতির মনে সন্দেহ ও ভয় দেখা দেয়। সারারাত ভালো করে ঘুমাতে
পারেন না। ভোর বেলা আরব সেনাপতির লোকজন তার ঘুম ভাঙ্গায়।
প্রশ্ন ॥> “তাহার অনুসরণ করিতেছিলেন” - কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কাকে অনুসরণ করছিলেন? তাঁর এই অনুসরণের কারণ
কি? শত্রুকে কাছে পেয়েও তিনি ‘বৈরসাধন সংকল্প’ সাধন করেননি কেন?
উত্তর ॥> বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের আরব সেনাপতির কথা বলা
হয়েছে।
॥> তিনি আরব জাতির শত্রু এক মুরসেনাপতিকে
অনুসরণ করছিলেন।
॥> মুরসেনাপতি ছিলেন আরব সেনাপতির পিতার হত্যাকারী। তাই পিতার
হত্যাকারীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আরব সেনাপতি ঘোড়ায় চেপে মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করেছিলেন।
॥> আরব জাতির অতিথিপরায়নতা পৃথিবীতে বিখ্যাত। যত বড়ই হোক না কেন, আশ্রয়প্রার্থীর কোন প্রকার ক্ষতি করা আরবদের রীতি বিরোধী। তাই শত্রু মুর
সেনাপতিকে কাছে পেয়েও তার কোনো প্রকার ক্ষতি
করেননি আরব সেনাপতি।
প্রশ্ন ॥> নিচের শব্দগুলির দল বিশ্লেষণ করে মুক্তদল ও রুদ্ধদল চিহ্নিত করো।
(সংগ্রাম, অশ্বপৃষ্ঠ, দণ্ডায়মান, করমর্দন, তৎক্ষণাৎ)
উত্তর ॥>
সংগ্রাম – সং (রুদ্ধ
দল) গ্রাম্ (রুদ্ধ দল)
অশ্বপৃষ্ঠে – অশ্ (রুদ্ধ দল) শো (মুক্ত দল) পৃষ্ (রুদ্ধ দল) ঠো (মুক্ত দল)
দণ্ডায়মান – দন্ (রুদ্ধ দল) ডা (মুক্ত দল) য় (মুক্ত দল) মান্ (রুদ্ধ দল)
করমর্দন – ক (মুক্ত দল) রো (মুক্ত দল) মর্ (রুদ্ধ দল) দন্ (রুদ্ধ দল)
তৎক্ষণাৎ – তৎ (রুদ্ধ দল) খ (মুক্ত দল) নাৎ (রুদ্ধ দল)
নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য রচনা করো
১। আরবের তাহার অনুসরণে বিরত হইলে, তিনি স্বপক্ষীয় শিবিরের উদ্দেশ্যে গমন করিতে লাগিলেন। (জটিল বাক্যে)
উত্তর ॥> আরবরা যখন তাহার অনুসরণে বিরত হইল, তখন তিনি স্বপক্ষীয় শিবিরের উদ্দেশ্যে গমন করিতে লাগিলেন।
২। আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোন জাতিই আরব দিগের তুল্য
নহে। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর ॥> আতিথেয়তা বিষয়ে আরবরা পৃথিবীর অন্য যে কোন জাতি অপেক্ষা অতুলনীয়।
৩। দ্বারদেশে উপস্থিত হইয়া দেখলেন, তিনি
সজ্জিত অশ্বের মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান আছেন। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর ॥> দ্বারদেশে উপস্থিত হলেন এবং দেখিলেন তিনি সজ্জিত অশ্বের মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান
আছেন।
৪। এই বিপক্ষশিবির মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর বিপক্ষ আর নাই। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর ॥> এই
বিপক্ষশিবির মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর বিপক্ষ
আর আছে কি?
৫। তিনি নির্বিঘ্নে স্বপক্ষীয় শিবির
সন্নিবেশস্থানে উপস্থিত হইলেন।
উত্তর ॥> তিনি কোন প্রকার বিঘ্নের সম্মুখীন
না হইয়াই স্বপক্ষীয় শিবির সন্নিবেশস্থানে উপস্থিত হইলেন।
0 Comments