চন্দ্রগুপ্ত । দ্বিজেন্দ্রলাল
রায় । আলোচনা ।
প্রশ্ন উত্তর । Chandragupta by
Dwijendralal Roy । class
8 । সহায়িকা
বিষয়সংক্ষেপ । বিষয়বস্তু । অষ্টম শ্রেণি
।
নামকরণ >>। নামকরণ
সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মাধ্যমেই বিষয়বস্তু সম্পর্কে
প্রাথমিক ধারণা লাভ করা যায়। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ইতিহাস
আশ্রিত নাটক চন্দ্রগুপ্ত–এর প্রথম
অঙ্কের প্রথম দৃশ্য হল বর্তমান পাঠ্যাংশ। পাঠ্যাংশের শিরোনামও ‘চন্দ্রগুপ্ত’। এই নাট্যাংশে সিন্ধু নদের তীরে এশিয়া ও ইউরোপ
বিজয়ী বীর সেকেন্দার শা–র পায়ের সামনে দাঁড়িয়ে চন্দ্রগুপ্ত তার ভয়ডরহীন
সাহসী মনের পরিচয় রেখেছেন। চন্দ্রগুপ্তের
বীরের মতো আচরণ এবং সেই আচরণে খুশি হয়ে সেকেন্দার পায়ের শা–র ভবিষ্যৎবাণী
নাট্যাংশের প্রধান বিষয়। তাছাড়া
অ্যান্টিগোনস ও সেলুকাসের
দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে চন্দ্রগুপ্তকে কেন্দ্র করেই। তাই নাট্যাংশটির শিরোনাম চন্দ্রগুপ্ত, সার্থক ও সুন্দর
হয়েছে।
সারসংক্ষেপ >>। ভারতের
বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যুগে যুগে পৃথিবীর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ভারতে এসেছে। তারা ভারতের
বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রকৃতি এবং এখানকার মানুষের অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে মুগ্ধ হয়েছে। তারিফ করেছে। গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার শা তাদেরই
একজন। তার উক্তি, “সত্য সেলুকাস ! কি বিচিত্র এই দেশ !” প্রায় প্রবাদের মর্যাদা পেয়েছে। শুধু প্রাকৃতিক
পরিবেশ নয়, এখানকার মানুষের চরিত্রের গুণাবলীও তাকে
মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। বন্দী পুরুরাজের সাহসিকতা, মর্যাদাবোধ
সেকেন্দার শা–কে তার রাজ্য ফিরিয়ে দিতে
অনুপ্রাণিত করেছে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বন্দী চন্দ্রগুপ্ত–এর সত্যবাদীতা, বীরত্ব
এবং জীবন কাহিনী শুনে তাকে উদারমনা সেকেন্দার মুক্তি দেন। তিনি চন্দ্রগুপ্তকে আশীর্বাদ করে ভবিষ্যৎ বাণী করেন যে চন্দ্রগুপ্ত তার
হারানো রাজ্য উদ্ধার করবেন এবং একদিন দিগবিজয়ী বীর হয়ে উঠবেন।
ব্যাকরণ ও নির্মিতি >>।
শব্দার্থ >>।
॥• সিন্ধু– নদতট = সিন্ধু নদীর তীর
॥• জাহাজ–শ্রেণী = জাহাজের সারি
॥• কাল = সময়
॥• সেনা শিবির = সেনানিবাস / ছাউনী
॥• পার্শে = পাশে
॥• হস্ত = হাত
॥• দণ্ডায়মানা = দাঁড়িয়ে
আছে (স্ত্রীলিঙ্গ)
॥• শুভ্র = সাদা
॥• চন্দ্রমা = চাঁদ
॥• স্নিগ্ধ = আরামদায়ক
॥• তামসী = অন্ধকার পূর্ণ
॥• অগণ্য = যা গোনা যায় না
॥• জ্যোতিঃপুঞ্জে = গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদির আলোয়
॥• বিস্মৃত = চমৎকৃত
॥• আতঙ্কে = ভয়ে
॥• প্রাবৃটে = বর্ষাকালে
॥• নির্বাক = কথা না বলে
॥• অভ্রভেদী = আকাশকে ভেদ করে উপরে উঠে গেছে এমন
॥• তুষার – মৌলি = বরফঢাকা চূড়ো
॥• হিমাদ্রি = হিমালয় পর্বত
॥• ফেনী = ফেনাযুক্ত
॥• উদ্দাম = খুবই প্রবল
॥• স্বেচ্ছাচারের = যা খুশি তাই করার
॥• তালীবন = তাল গাছের বন
॥• মদমত্ত =অহংকারে মাতাল
॥• মাতঙ্গ = হাতী
॥• জঙ্গম = গতি আছে এমন
॥• মন্থর = ধীর
॥• মহাভুজঙ্গম = বিশাল আকৃতির সাপ
॥• মহাশৃঙ্গ = বড়ো শিং রয়েছে এমন
॥• কুরঙ্গম = হরিণ
॥• শূন্য প্রেক্ষণে = শূন্য দৃষ্টিতে
॥• সৌম্য = সুন্দর
॥• গৌর = ফরসা
॥• দীর্ঘ–কান্তি = দীর্ঘদেহী
॥• বাত্যার = ঝড়ের
॥• শৌর্য = বীরত্ব
॥• প্রত্যর্পণ = ফিরিয়ে দেওয়া
॥• মহানুভব = উদার
॥• কীর্তি = যশ, খ্যাতি
॥• ঝঞ্ঝার = ঝড়ের
॥• ধূমরাশির = ধোঁয়ার
॥• নিয়তি = অদৃষ্ট
॥• দুর্বার = যাকে বারণ করা যায় না
॥• করাল = ভয়ঙ্কর
॥• রুধিরাক্ত = রক্তমাখা
॥• বিজয়–শকট = জ়য়রথ
॥• ব্যূহ = যুদ্ধের জন্য
কৌশলে সৈন্য সাজানো
॥• মাসাবধি = বঢী এক মাস ধরে
॥• অভিপ্রায়ে = উদ্দেশ্যে
॥• বৈমাত্র = বিমাতার সন্তান
॥• ভূপতি = সম্রাট
॥• আর্যকুলরবি = ক্ষত্রিয় দের মধ্যে সেরা
॥• ভ্রুকুটি = ভ্রু কোঁচকানো
॥• হৃত= হরণ করা হয়েছে এমন
॥• বিশ্বাসঘাতক = বিশ্বাসভঙ্গকারী
॥• নিরস্ত = বিরত; থামা
॥• ভূপতিত = মাটিতে পড়া
॥• শির = মাথা
॥• অগোচর = দৃষ্টির বাইরে
॥• নির্বাসিত = স্বদেশ থেকে বের করে
দেওয়া
॥• কাপুরুষ = পৌরুষ–হীন
॥• ত্রস্ত
= ভীত
॥• বধ =
হত্যা
॥• দুর্জয় = যাকে জয় করা যায় না
বিপরীত শব্দ
॥• অস্তগামী => উদীয়মান
॥• দণ্ডায়মানা => উপবিষ্টা
॥• শুভ্র => কৃষ্ণ
॥• আতঙ্কে => আনন্দে
॥• প্রকাণ্ড => ক্ষুদ্র
॥• নির্বাক => সবাক
॥• তপ্ত => শীতল
॥• মন্থর => দ্রুত
॥• নির্জন => জনপূর্ণ
॥• সারল্য => কৌটিল্য
॥• পরাজয় => জয়
॥• প্রত্যর্পণ => অধিগ্রহণ
॥• ভীরু => সাহসী
॥• মুক্ত => বন্ধ
বাক্য রচনা
॥• জ্যোৎস্না => জ্যোৎস্নায় রাতের অন্ধকার কেটে গেছে।
॥• প্রতিশোধ => পলাশ প্রতিশোধ নিতে চায়।
॥• গুপ্তচর => প্রাচীন
রাজাদের গুপ্তচর সংস্থা
ছিল।
॥• নির্বাসিত => সমর আজ নিজের দেশ থেকে নির্বাসিত।
নিচের বাক্যগুলি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদ খুঁজে নিয়ে সন্ধি বিচ্ছেদ করো
॥• আমি নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে দেখি।
উত্তর ॥> নির্বাক => নিঃ + বাক
॥• বিশাল নদনদী ফেনিল উচ্ছ্বাসে উদ্দাম বেগে ছুটেছে।
উত্তর ॥> উচ্ছ্বাস => উৎ + শ্বাস উদ্দাম => উৎ + দাম
॥• সে নির্ভীক নিষ্কম্পস্বরে উত্তর দিল, ‘রাজার প্রতি রাজার আচরণ’।
উত্তর ॥> নির্ভীক => নিঃ + ভীক নিষ্কম্পস্বরে => নিঃ + কম্পস্বরে
॥• আমি এসেছি সৌখিন দিগ্বিজয়ে।
উত্তর ॥> দিগ্বিজয়ে => দিক + বিজয়ে
॥• তুমি হৃতরাজ্য উদ্ধার করবে।
॥• উদ্ধার => উদ্ + হার
ব্যাসবাক্য সহ সমাসের নাম লেখঃ
দৈত্যসৈন্য, নদ-নদী,
স্নেহছায়া, অসম্পূর্ণ, বিজয়বার্তা, অভ্রভেদী
॥• দৈত্যসৈন্য => যে দৈত্য সেই সৈন্য (সাধারন
কর্মধারায়)
॥• নদ-নদী => নদ ও নদী (দ্বন্দ্ব)
॥• স্নেহছায়া => স্নেহ রুপ ছায়া (রুপক কর্মধারায়)
॥• অসম্পূর্ণ => নয় সম্পূর্ণ (নঞ্
তৎপুরুষ)
॥• বিজয়বার্তা => বিজয়ের বার্তা (সম্বন্ধ তৎপুরুষ )
॥• অভ্রভেদী => অভ্রকে (আকাশকে) ভেদ করেছে যা (উপপদ তৎপুরুষ)
ক্রিয়ার কাল নির্দেশ করো॥
॥• হেলেন সেলুকাসের হস্ত ধরিয়া তাহার পার্শ্বে
দণ্ডায়মান।
উত্তর ॥> ঘটমান বর্তমান
॥• এই মরুভূমি স্বেচ্ছাচারের মতো তপ্ত বালুরাশি নিয়ে খেলা করছে।
উত্তর ॥> ঘটমান বর্তমান।
॥• চমকিত হলাম।
উত্তর ॥> সাধারণ অতীত
॥• আমার শিবিরে তুমি গুপ্তচর হয়ে প্রবেশ করেছে।
উত্তর ॥> পুরাঘটিত বর্তমান।
॥• নির্ভয়ে তুমি তোমার রাজ্যে ফিরে যাও।
উত্তর ॥> বর্তমান অনুজ্ঞা
নিম্ন রেখাঙ্কিত শব্দটির কারক বিভক্তি নির্দেশ করো॥
॥• কি বিচিত্র এই দেশ ।
উত্তর ॥> কর্তৃকারক, শূন্য বিভক্তি
॥• আমি বিস্মিত আতঙ্কে চেয়ে থাকি।
উত্তর ॥> নিমিত্ত কারক, এ বিভক্তি
॥• মদমত্ত মাতঙ্গ জঙ্গমপর্বতসম মন্থর গতিতে চলেছে।
উত্তর ॥> কর্তৃকারক, শূন্য বিভক্তি
॥• বাধা পেলাম প্রথম সেই শতদ্রুতীরে।
উত্তর ॥> অধিকরণ কারক, এ বিভক্তি
॥• আমি যা শিখেছি তা এই পত্রে লিখে নিচ্ছিলাম।
উত্তর ॥> অধিকরণ কারক, এ বিভক্তি
নিচের শব্দগুলির দল বিশ্লেষণ করে ॥
স্থিরভাবে, নিস্কম্পস্বরে, বিজয়বাহিনী, চন্দ্রগুপ্ত, আর্যকুলরবি
উত্তর ॥>
॥• স্থিরভাবে :¦ স্থির্ (রুদ্ধদল) ভা (রুদ্ধদল)
বে (মুক্তদল)
॥• নিস্কম্পস্বরে :¦ নিষ্ (রুদ্ধদল) কম্
(রুদ্ধদল) পো (মুক্তদল) স্ব (মুক্তদল) রে (মুক্তদল)
॥• বিজয়বাহিনী :¦ বি (মুক্তদল) জয়্ (মুক্তদল)
বা (মুক্তদল) হি (মুক্তদল) নী (মুক্তদল)
॥• চন্দ্রগুপ্ত :¦ চন্ (রুদ্ধদল) দ্র (মুক্তদল)
গুপ (রুদ্ধদল) তো (মুক্তদল)
॥• আর্যকুলরবি :¦ আর্ (রুদ্ধদল) যো (মুক্তদল) কু (মুক্তদল)
লো (মুক্তদল) রো (মুক্তদল) বি (মুক্তদল)
নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো॥
প্রশ্ন॥ নদতটে শিবির সম্মুখে সেকেন্দার
ও সেলুকাস অস্তগামী সূর্যের দিকে চাহিয়া ছিলেন। (দুটি বাক্যে ভেঙে লেখ)
উত্তর ॥> নদতটে বির সম্মুখে দাঁড়াইয়া ছিলেন সেকেন্দার
ও সেলুকাস। তাহাঁরা অস্তগামী সূর্যের
দিকে চাহিয়া ছিলেন।
প্রশ্ন॥ আমার কাছে কিরূপ আচরণ প্রত্যাশা করেন। (পরোক্ষ উক্তিতে)
উত্তর ॥> এক ব্যক্তিকে অপর ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন যে (তিনি) তাঁর কাছে কিরূপ আচরণ
প্রত্যাশা করেন।
প্রশ্ন॥ জগতে একটা কীর্তি রেখে যেতে চাই। (না সূচক বাক্যে)
উত্তর ॥> জগতে একটা কীর্তি না রেখে যেতে চাই না।
প্রশ্ন॥ আমি যা শিখেছি তা এই পত্রে লিখে নিচ্ছিলাম। (সরল বাক্যে)
উত্তর ॥> আমার শিক্ষা এই পত্রে লিখে নিচ্ছিলাম।
প্রশ্ন॥ তোমার অপরাধ তত নয়। (হ্যাঁ-সুচক বাক্যে)
উত্তর ॥> তোমার অপরাধ অপেক্ষাকৃত কম।
প্রশ্ন॥ এক গৃহহীন নিরাশ্রয় হিন্দু রাজপুত্র
ছাত্র হিসেবে তাঁর কাছে উপস্থিত, তাতেই
তিনি ত্রস্ত। (নিম্নরেখ শব্দের বিশেষ্যরূপ ব্যবহার করে বাক্যটি
লেখো)
উত্তর ॥> এক গৃহহীন নিরাশ্রয় হিন্দু রাজপুত্রের ছাত্র হিসেবে উপস্থিতে, তিনি ত্রস্ত।
প্রশ্ন॥ কী বিচিত্র এই দেশ। (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর ॥> এই দেশ অতি বিচিত্র।
প্রশ্ন॥ সত্য সম্রাট। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর ॥> মিথ্যা নয় সম্রাট।
প্রশ্ন॥ এ দিগ্বিজয় অসম্পূর্ণ রেখে যাচ্ছেন কেন সম্রাট। (পরোক্ষ উক্তিতে)
উত্তর ॥> কোন এক ব্যাক্তি অপর ব্যক্তিকে সম্রাট সম্বোধনে
জিজ্ঞাসা করল সেই দ্বিগবিজয় অসম্পূর্ণ রেখে যাওয়ার কারণ।
প্রশ্ন॥ ভারতবাসী মিথ্যা কথা বলতে এখনো শিখেন নাই। (হ্যাঁ সূচক বাক্যে)
উত্তর ॥> ভারতবর্ষে এখন পর্যন্ত কেবল সত্য কথা বলতে শিখেছে।
প্রশ্ন॥ আমি এরূপ বুঝি নাই। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)
উত্তর ॥> আমি অন্য রূপ বুঝিয়াছি।
প্রশ্ন॥ সেকেন্দার শাহ এত কাপুরুষ ভাবি নাই। (নিম্ন রেখাঙ্কিত শব্দের বিশেষ্য রুপ ব্যবহার করো)
উত্তর ॥> সেকেন্দার শাহ-এর কাপুরুষত্ব
এতোখানি তাহা ভাবি নাই।
প্রশ্ন॥ সম্রাট আমায় বধ না করে বন্দী করতে পারবেন
না। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর ॥> সম্রাট আমায় আগে বদ করুন এবং তারপর আমায়
বন্দি করুন।
প্রশ্ন॥ আমি পরীক্ষা করছিলাম মাত্র। (জটিল বাক্যে)
উত্তর ॥> আমি যা করছিলাম তা কেবল পরীক্ষা ছিল।
প্রশ্ন॥ নির্ভয়ে তুমি
তোমার রাজ্যে ফিরে যাও। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর ॥> ভয় না করেই তুমি তোমার রাজ্যে ফিরে যাও।
0 Comments