চিঠি । মাইকেল মধুসূদন দত্ত । আলোচনা । প্রশ্ন উত্তর । Chithi by Michael Madhusudan Dutta । class 8 । সহায়িকা বিষয়সংক্ষেপ । বিষয়বস্তু । অষ্টম শ্রেণি ।
নামকরণ
>>।
সাহিত্যে নামকরণ বা শিরোনাম
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মাধ্যমেই আমরা সাহিত্যের বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটা ধারনা
করতে পারি। আলোচ্য পাঠ্যাংশে
তিনটি চিঠি মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্রাবলী থেকে নেওয়া হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা চিঠি গুলি অনুবাদ করেছেন সুশীল রায়। বিদ্যাসাগর, গৌড়দাস বসাক
ও রাজনারায়ণ বসু-কে লেখা এই চিঠিগুলি পড়লে বোঝা যায়
মধুসূদনের সঙ্গে এই তিনজনের আন্তরিকতা কত গভীর ছিল। যাই হোক, পাঠ্যাংশের বিষয়বস্তু যেহেতু তিনটি চিঠি, তাই নামকরণ যথাযথ হয়েছে বলায় যুক্তিযুক্ত।
সারসংক্ষেপ >>।
মধুসূদন বিদ্যাসাগর কে চিঠি লিখেছেন ফ্রান্স থেকে। চিঠিতে তিনি বিদ্যাসাগরের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিপদের দিনে তাকে সাহায্য করার জন্য। মধুসূদন বিদেশে থাকার সময় তাঁর পরিবারের পাশে বিদ্যাসাগর যেন আগের মতই থাকেন। এই অনুরোধ চিঠিতে ফুটে উঠেছে। তিনি চিঠিতে ইউরোপের প্রচণ্ড শীতের কথা লিখেছেন। তিনি অলসভাবে দিন না কাটিয়ে ফরাসি, জার্মান ও ইতালির ভাষা শিখছেন এ কথাও চিঠিতে জানিয়েছেন।
দ্বিতীয় চিঠিটি
মধুসূদন তাঁর সহপাঠী ও বাল্যবন্ধু গৌরদাস বসাক-কে লিখেছেন। ‘সীলন’ নামক জাহাজে চরে ভূমধ্যসাগরে ভেসে বেড়ানোর বর্ণনা। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে স্পেনের উপকূল ছাড়িয়ে জিব্রাল্টার প্রণালীর দিকে
যাওয়ার কথা। যে দেশে যাওয়ার জন্য তিনি এতদিন এত কষ্ট সহ্য
করেছেন, সেই দেশে ক্রমশ কাছে চলে আসছে ভেবে তিনি যে রোমাঞ্চ
অনুভব করেছেন তা বাল্য বন্ধুর কাছে গোপন রাখেননি।
তৃতীয় চিঠিটি
মধুসূদন লিখেছেন তাঁর
সহপাঠী তথা বাল্যবন্ধু রাজনারায়ণ বসুকে। এই চিঠিতে মধুসূদন তাঁর লেখা মেঘনাদবধ কাব্যের ষষ্ঠ স্বর্গের প্রসঙ্গ
তুলেছেন। পাশাপাশি মেঘনাদবধ কাব্য সম্পর্কে রাজনারায়ণের
অভিমতকে তিনি যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন তা জানিয়েছেন। দুজনের আন্তরিকতা এবং অন্তরঙ্গতা যে অনেকখানি তাও প্রকাশিত হয়েছে এই
চিঠিতে।
ব্যাকরণ
ও নির্মিতি >>।
শব্দার্থ
>>।
॥• পরিষ্কার => স্পষ্ট
॥• লন্ডন => ইংল্যান্ডের রাজধানী
॥• বিষয় আসয় => সম্পত্তি
॥• তত্ত্বাবধান => দেখভাল
দেখাশোনা
॥• ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ =>
প্রচন্ড বিপদ
॥• মারাত্মক => প্রচন্ড
॥• হিমানী => বরফের
মত ঠান্ডা
॥• রপ্ত => আয়ত্ত
॥• অকপটে => কোনরকম ছলনা না করে
॥• জাঁকজমক => আড়ম্বর
॥• তত্ত্বাবধান => দেখভাল
দেখাশোনা
॥• ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ => প্রচন্ড বিপদ
॥• ক্যাবিন => জাহাজের ছোট ঘর
॥• পর্বতাকীর্ণ => পর্বতে
ঘেরা
॥• মলটা => (মাল্টা) ভূমধ্যসাগরের
কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটা দ্বীপ
॥• আলেকজান্দ্রিয়া => মিশরের দ্বিতীয় বৃহৎতম শহর ও বন্দর
॥• বিষন্ন => বিষাদপূর্ণ
॥• পত্রাঘাত
=> চিঠির মাধ্যমে আঘাত
॥• জীবিকানির্বাহ => বেঁচে থাকার
ব্যবস্থা,
খাওয়া পড়ার ব্যবস্থা
॥• দৃঢ় সংকল্প => কঠোর প্রতিজ্ঞা
॥• জিব্রাল্টার => ভূমধ্যসাগর
ও পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে সংযোগকারী সমুদ্র প্রণালী। এটি উত্তর আফ্রিকাকে দক্ষিণ ও পশ্চিম ইউরোপের আইবেরীয়
উপদ্বীপ থেকে পৃথক করেছে।
॥• ডেরা => আস্তানা
॥• মেঘনাদ => রাবণের পুত্র রামায়ণের চরিত্র;
মধুসূদন রচিত একটি কাব্যের প্রধান চরিত্র
॥• সজ্জাগত => বিছানায় শুয়ে থাকা
॥• রুদ্ধনিঃশ্বাসে => একান্ত
আগ্রহের সঙ্গে
॥• সাক্ষাৎ => দেখা
॥• অভিমত => মতামত
॥• কীর্তিমান => কীর্তির অধিকারী
॥• নশ্বর => মরণশীল
॥• অকপট => কপটতাহীন;
ছলচাতুরি মুক্ত
॥• স্বর্গ => অধ্যায়
বা পরিচ্ছেদ
বিপরীত শব্দ >>।
॥• স্বর্গীয় => পার্থিব
॥• অসম্ভব => সম্ভব
॥• নশ্বর => অবিনশ্বর
॥• কীর্তিমান => কীর্তিহীন
॥• উৎকৃষ্ট => নিকৃষ্ট
॥• পুরাতন => নুতন
॥• অকৃত্রিম
=> কৃত্রিম
॥• শান্ত => অশান্ত
॥• বিশ্বাস => অবিশ্বাস
॥• বিষন্ন => আনন্দিত
॥• অলস => কর্মঠ
বাক্য
রচনা
॥• পরিষ্কার => আমাদের পরিবেশকে
পরিষ্কার রাখা প্রধান উচিত।
॥• অকৃত্রিম => রাহুল আর সোমনাথের বন্ধুত্ব
অকৃত্রিম।
॥• সাক্ষাৎ => বহুদিন পর আজ সাক্ষাৎ
হল।
॥• ডেরা => সেখানে তার ডেরা রয়েছে।
॥• স্বর্গ => রামায়ণের সব স্বর্গ
কি
পড়েছ ?
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
ও উত্তর
প্রশ্ন॥ মধুসূদন দত্ত কোন কলেজের ছাত্র ছিলেন ?
উত্তর
॥> মধুসূদন দত্ত হিন্দু কলেজের
ছাত্র ছিলেন।
প্রশ্ন॥ পদ্মাবতী নাটকে
তিনি কোন ছন্দ ব্যবহার করেছিলেন ?
উত্তর ॥> পদ্মাবতী নাটকে তিনি অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেছিলেন।
প্রশ্ন॥ মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার ‘প্রিয় ও পুরাতন বন্ধু’ গৌরদাস বসাক কে কোথা থেকে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছিলেন ? তার যাত্রাপথের বিবরণ পত্রটিতে কিভাবে ধরা পড়েছে আলোচনা করো।
উত্তর
॥> ‘সীলোন’ জাহাজে
বিলেত যাত্রাকালে ভূমধ্যসাগরের উপর
দিয়ে ভেসে যাওয়ার সময় মধুসূদন দত্ত তার প্রিয় বন্ধু গৌর
দাস বসাক কে চিঠিটি লিখেছিলেন।
॥> যে
জাহাজে মধুসূদন ভ্রমন
করছিলেন সেটি রাজপ্রাসাদের মতো জাকজমকপূর্ণ ছিল। তার
সেলুনগুলো রাজপ্রাসাদের সেলুনগুলোর মতো আর কেবিনগুলো ছিল রাজপুত্রদের
উপযোগী। মধুসূদনের মনে হচ্ছিল যেন কোন এক রূপকথার রাজ্যের মধ্য দিয়ে রাজপ্রাসাদে
ভেসে চলেছেন তিনি। জাহাজ থেকে দূরবর্তী তীরের দিকে তাকিয়ে
তিনি উত্তর আফ্রিকার পর্বতময় উপকূলভূমি দেখতে পাচ্ছিলেন। স্পেনের উপকূল ছাড়িয়ে জিব্রাল্টারের দিকে
যাওয়ার সময় সমুদ্র অনেকটা শান্ত আর আবহাওয়া বেশ মনোরম ছিল। মধুসূদনের ইচ্ছে ছিল এই যাত্রাপথের বিস্তারিত বিবরণ ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ড’ পত্রিকায় প্রকাশ করবেন। তাই সংক্ষেপেই তিনি চিঠি শেষ করেছিলেন।
0 Comments