ছন্নছাড়া । অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত । সারসংক্ষেপ । প্রশ্ন উত্তর । ব্যাকরণ ।

পল্লীসমাজশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আলোচনা । প্রশ্ন উত্তর । Chhannochhara by Achinta Kumar Sengupta  class 8  সহায়িকা বিষয়সংক্ষেপ । বিষয়বস্তু  অষ্টম শ্রেণি

Channochara by Achinta Kumar Sengupta


।। কবি পরিচিতি ।।

অবিভক্ত বাংলার নোয়াখালিতে ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ১৯ সেপ্টেম্বর অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের জন্ম হয় ১৩ বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর তিনি কলকাতায় আসেন। তিনি সাউথ সুবাবন কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স পাস করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম পাস করেন। পরে তিনি আইনের ডিগ্রিও লাভ করেন। মুনসেফ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে শেষপর্যন্ত তিনি জেলা জজ হয়েছিলেন। অবসর গ্রহণ করার আগে পর্যন্ত তিনি সেই পদে ছিলেন। তিনি নীহারিকা দেবী ছদ্মনামে কবিতা লেখা শুর করেন। বাংলা সাহিত্যের সব ক্ষেত্রেই তাঁর অবদান রয়েছে। তাঁর প্রথম উপন্যাস বেদে অসম্ভব জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। a ছাড়া আকস্মিক, কাকজ্যোৎস্না, বিবাহের চেয়ে বড়ো, প্রাচীর ও প্রান্তর, প্রথম কদম ফুল হল তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। তাঁর কয়েকটি গল্পগ্রন্থের নাম হল- টুটাফুটা, ইতি, অকালবসন্ত, অধিবাস, কাঠ, খড়, কেরোসিন প্রভৃতি। তিনি কল্লোল পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। অমাবস্যা, আমরা, প্রিয়াও পৃথিবী, নীল আকাশ আজন্ম সুরভিতাঁর রচিত বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া কল্লোলযুগ কবি শ্রীরামকৃষ্ণ, পরমপুরুষ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ প্রভৃতি প্রবন্ধগ্রন্থও রচনা করেছেন কবি। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে এই কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক এবং প্রাবন্ধিক পরলোক গমন করেন।

 

।। নামকরণ ।।
সাহিত্যে নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মাধ্যমেই পাঠক বিষয়বস্তু সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা লাভ করতে পারে। এই নামকরণ নানাভাবে করা হয়ে থাকে-চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাভিত্তিক, বিষয়ভিত্তিক কিংবা বাঞ্ছনাধর্মী ইত্যাদি। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের 'ছন্নছাড়া' কবিতাটিতে বেকার বাউন্ডুলে যুবকদের প্রতি একদিকে সমাজের অন্যদিকে কবির নিজের মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। এইসব বেকার বাউন্ডুলে যুবকদের সমাজ তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, ঘৃণার চোখে দেখে। কিন্তু শিক্ষিত সমাজ যেখানে নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলে, সেখানে এই বেকার বাউন্ডুলে ছন্নছাড়া যুবকরাই রাস্তার ডিথিরির প্রাণ বাঁচানোর জন্য জান লড়িয়ে দেয়। কবিতার শিরোনামে এই যুবকদের সম্বন্ধে সমাজের আপাত ধারণার কথাই বলা হয়েছে। আসলে কবি বলতে চেয়েছেন, যাদের আমরা ছন্নছাড়া বলি তারা কি সত্যিই ছন্নছাড়া! কবি ‘ছন্নছাড়া' নামকরণের মাধ্যমে বিশেষ এক ব্যঞ্জনা ফুটিয়ে তুলেছেন। তাই এই প্রতীকী নামকরণটি ও সুন্দর হয়েছে বলে আমি মনে করি ।

 

।। সারসংক্ষেপ ।।
গল্পের আদলে রচিত 'ছন্নছাড়া' কবিতাটিতে সমাজের চোখে ছন্নছাড়া যুবকদের প্রতি কবির সহমর্মিতা প্রকাশ পেয়েছে। কবিতার শুরুতেই দেখা যায় জীর্ণ, শীর্ণ, লতাপাতাহীন ছাল- বাকলহীন একটি গাছ। গাছ নয়—কবির ভাষায় গাছের প্রেতচ্ছায়া, যাকে কবি তুলনা করেছেন বেকার বাউন্ডুলে যুবকদের সঙ্গে। তাদেরও কিছুই নেই—সিনেমার টিকিট, হাসপাতালের বেড, কলেজের সিট, অনুসরণযোগ্য নেতা, প্রেরণা জোগানো প্রেম, পাড়ার রক কিছু নেই। অথচ রাস্তার ভিখিরি গাড়ি চাপা পড়লে এরাই তাকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। তাদের এই কাজ কবিকে মুখ করে। কবিতার শেষে কবি আবার সেই প্রতীকী গাছটিকে ফিরিয়ে আনেন। গাছটি এখন লতা-পাতা-ফুলে ভরে উঠে সবুজ প্রাণের আভা ছড়িয়ে দিচ্ছে। কবি মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন কোনো কিছু না থাকা এই ‘ছন্নছাড়া' বেকার বাউণ্ডলে যুবকরা হৃদয়হীন নয়। সমাজ তাদের অবহেলা করলেও এরাই অবহেলিত মানুষদের পাশে দাঁড়ায় |

ব্যাকরণ ও নির্মিতি >>

 

।। শব্দার্থ >>। 

ছন্নছাড়া  => বাউন্ডুলে

প্রেতচ্ছায়া => পিশাচ বা প্রেতের মতো ছায়া কঙ্কাল মাংসহীন ছাড়পাজরা

এলোমেলো => অগোছালো

রুক্ষ => কর্কশ

রুষ্ট => অসন্তুষ্ট; ক্রুদ্ধ

রিক্ত => শূন্য; খালি

জীর্ণ => ভগ্ন অবস্থা; ক্ষয়প্রাপ্ত

বাকল => গাছের ছাল

আঁচড় => দাগ

প্রতিশ্রুতি => কথা দেওয়া; অঙ্গীকার সরস রসযুক্ত

সম্ভাবনা => সুযোগ

বেকার => কাজকর্মহীন

চোঙা প্যান্ট => চোঙের মতো উপর থেকে নীচের দিকে সরু হয়ে আসা প্যান্ট

জরুরি => প্রয়োজনীয়

চোখা জুতো => সামনের দিকে সরু হয়ে আসা জুতো রোখা মেজাজ রুক্ষ মেজাজ

ঠোকা কপাল => পোড়া কপাল; হতভাগ্য

লিফ্ট চাইবে => গাড়িতে তুলে নিয়ে কোথাও পৌঁছে দিতে চাইবে

নৈরাজ্য => অরাজকতা

নেই রাজ্যের => যেখানে কিছুই নেই এমন জায়গা

বাসিন্দে => অধিবাসী

ভিটে => বাস্তু; থাকার জায়গা

ভিত => বুনিয়াদ

• কানুন => আইন

বিনয় => বিনীতভাব

শ্লীলতা => ভদ্রতা ; শালীনতা

প্রেরণা => উৎসাহ .

সম্ভাষণ => সম্বোধন

দরদ => দয়ামায়া

ক্ষুধাহরণ => খিদে মেটানো

সুধাক্ষরণ => মিষ্টি কথা বলা

সুধাহরণ => কটু কথা বলা

ক্ষুধাভরণ => খিদে বাড়িয়ে দেওয়া

ফালতু => অকাজের

• রক => রোয়াক

লোপাট => নিশ্চিহ্ন

ক্ষুলিশ => আগুনের ফুলকি

বারুদ => বিস্ফোরক পদার্থ

শটকাট => কম সময়ে পৌঁছানোর উপায়

লে হালুয়া => আনন্দসূচক অভিব্যক্তি

সোল্লাসে => আনন্দ সহকারে

সিটি => শিস

অভ্যর্থনা => আপ্যায়ন

ধাওয়া => পিছু তাড়া করা

• বেওয়ারিশ => দাবিদার নেই এমন

• পাঁজাকোলা => কোলে নেওয়ার মতো করে দু-হাতে বুকের কাছে তুলে ধরা

• সমস্বরে  => একসঙ্গে গলা মিলিয়ে

• ঝংকৃত => ঝংকারযুক্ত

• ভব্যতা => ভদ্রতা

• দুর্বার => যাকে প্রতিরোধ করা যায় না

• প্রত্যয় => স্থির বিশ্বাস

• বৈরাগ্য => অনাসক্তি; আসক্তিহীনতা

• বিদীর্ণ করে => ফাটিয়ে

• মর্মরিত => পাতার শব্দে মুখরিত

• কাকলি => পাখির ডাক

• স্নেহার্দ্র => ভালোবাসামাখা ল্যামল-সবুজ

• প্রচ্ছন্নে => গোপনে

• মাধুর্য => সৌন্দর্য

• বিস্তীর্ণ => বিশাল

।। বিপরীত শব্দ ।।
কঠোর => কোমল

• প্রচ্ছন্নে => সর্বসমক্ষে

• শ্যামল => ধূসর

বেওয়ারিশ => ওয়ারিশ

 ফালতু => কাজের

•  অধিকার => অনধিকার

• তপ্ত => শীতল

• আনন্দ => দুঃখ

• প্ৰকাণ্ড => ক্ষুদ্র

• খালি => ভরতি

• ভিজে => শুকনো

• ভবিষ্যৎ => অতীত

• শুকনো => সজীব

• রুক্ষ => মোলায়েম

• জীর্ণ => অজীর্ণ

• রুষ্ট => আনন্দিত

 

।। বাক্যরচনা কর ।।
এলোমেলো => মেঘলা কাজের চোবলটা সবসময় এলোমেলো করে রাখে

সরস => তবুজ সরস ফল।

ভবিষ্য=> ছাত্ররাই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ

• নৈরাজ্যের => সমাজবিরোধীরা। নৈরাজ্যের বাসিন্দা।

• ধাওয়া => পুলিশ চোরকে ধাওয়া করেছে।

• বৈরাগ্য => রাজেনবাবুর সংসারে প্রতি বৈরাগ্য এসেছে।

 

** নীচের প্রতিটি শব্দের দল বিভাজন করে দেখাও ।।

( এলোমেলো, ছন্নছাড়া, নৈরাজ্যে, বাসিন্দে, শালীনতা, আত্মীয়তা, শঙ্খধ্বনি, পত্রপুঞ্জে )


উত্তর ॥> 

এলোমেলো => (মুক্ত দল) লো (মুক্ত দল) মে (মুক্ত) (দল) লো (মুক্ত দ)

ছন্নছাড়া => ছন (রুদ্ধ দল) নো (মুক্ত দল) ছা (মুক্ত দল) ড়া (যুক্ত দল) 

• নৈরাজ্যে  => নৈ (মুক্ত দল) রাজ (রুদ্ধ দল) জে (যুক্ত দল)

বাসিন্দে => বা (মুক্ত দল) সিন্ (রুদ্ধ দল) দে (মুক্ত দল) 

শালীনতা => শা (মুক্ত দল) লী (মুক্ত দল) ন (যুক্ত দল) তা (যুক্ত দল)

আত্মীয়তা => আ‍ (রুদ্ধ দল) তি (মুক্ত দল) য় (মুক্ত দল) তা (মুক্ত দল) 

শঙ্খধ্বনি  => শং (রুদ্ধ দল) খো (মুক্ত দল) ধ (মুক্ত দল) নি (যুক্ত দল)

পত্রপুঞ্জে => পৎ (রুদ্ধ দল) রো (মুক্ত দল) পুন্ (রুদ্ধ দল)জে (মুস্ত দল)। 

 

** নীচের প্রতিটি শব্দের ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করো ।।

( বর্তমান, ভদ্রতা, সম্ভাষণ, গতি, ভিখিরি, ভব্যতা, রুষ্ট, জিজ্ঞেস, পিছে )


উত্তর ॥>

 বর্তমান => বৃৎ + শানচ

 ভদ্রতা => ভদ্র + তা

 সম্ভাষণ => সমভাষ + অনট

ভব্যতা => ভব্য + তা

গতি => গম্ + ক্তি

রুষ্ট => রম্ + ত

ডিবিরি => ভিক্ষা + অরি

জিজ্ঞেসভা => সন্ + অ + আ

 পিছে => পশ্চ + আত্


** নীচের শব্দগুলিতে ধ্বনি পরিবর্তনের কোন্ কোন্ নিয়ম কাজ করেছে তা দেখাও:

( জুতো, বাসিন্দে, ক্ষেত, চোখ, কদ্দুর, ভিখিরি )

উত্তর ॥>

জুতো => জুতা > জুতো; স্বরসংগতি

বাসিন্দে => বাসিন্দা > বাসিন্দে স্বরসংগতি

ক্ষেত => ক্ষেত্র > ক্ষেত; শব্দের শেষে ধবনিলোপ

চোখ => চক্ষু > চোখ; ধ্বনিলোপ

কদ্দুর => কত দূর > কদ্দুর; সমীভবন

ভিখিরি => ভিখারি > ভিখিরি; স্বরসংগতি


** নিম্নলিখিত পদগুলির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো ।।

প্রেতচ্ছায়া, ছাল-বাকল, ক্ষুধাহরণ, সোল্লাসে, স্নেহাট্টা, শঙ্খধ্বনি

উত্তর ॥>

 প্রেতচ্ছায়া => প্রেতের ছায়া; সম্বন্ধ তৎপুরুষ

ছাল => বাকল যা ছাল তাই বাকল; সাধারণ কর্মধারায়

•  ক্ষুধাহরণ => ক্ষুধাকে হরণ; কর্ম তৎপুরুষ

•  সোল্লাসে => উল্লাসের সহিত; সহার্থক বহুব্রীহি

 স্নেহার্ড => স্নেহের দ্বারা আর্দ্র: করণ তৎপুরুষ

শঙ্খধ্বনি => শঙ্খের ধ্বনি: সঞ্চয় তৎপুরুষ


** কোন্ শব্দে কী উপসর্গ আছে আলাদা করে দেখাও ।।

প্রতিশ্রুতি, বেওয়ারিশ, অনুসরণ, প্রচ্ছন্ন, অভ্যর্থনা, অধিকার

উত্তর ॥>

 প্রতিশ্রুতি => প্রতি (উপসর্গ)

বেওয়ারিশ => বে (উপসর্গ)

•  অনুসরণ => অনু (উপসর্গ)

 প্রচ্ছন্ন => প্র (উপসর্গ)

 অভ্যর্থনা => অডি (উপসর্গ)

অধিকার => অধি (উপসর্গ)

** নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো:

প্রশ্ন ওই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। (জটিল বাক্যে)

উত্তর> যেহেতু জরুরি দরকার সেহেতু ট্যাক্সি করে ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম।

 

প্রশ্ন দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে? (যৌগিক বাক্যে)

উত্তর> দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং আড্ডা দিচ্ছে ?


প্রশ্ন কারা ওরা ? (প্রশ্ন পরিহার করো)

উত্তর> ওদের পরিচয় দাও।


প্রশ্ন ঘেঁষবেন না ওদের কাছে। (ইতিবাচক বাক্যে)

উত্তর> ওদের থেকে দূরে থাকবেন।

প্রশ্ন একটা স্ফুলিশ-হীন ভিজে বারুদের স্তূপ। (না-সূচক বাক্যে)

উত্তর> স্ফুলিঙ্গ নেই এমন ভিজে বারুদের স্তূপ |

 

প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলুম, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে ? (পরোক্ষ উক্তিতে)

উত্তর> তাদের ট্যাক্সি লাগবে কি না জিজ্ঞেস করলুম।

 

প্রশ্ন আমরা খালি ট্যাক্সি খুঁজছি। (জটিল বাক্যে)

উত্তর> আমরা এমন একটা ট্যাক্সি খুঁজছি যেটা খালি।

প্রশ্ন দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠেছে ফুল। (ক্রিয়ার কাল নির্দেশ করো)

উত্তর> (পুরাঘটিত বর্তমান ।

।। নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও ।।

প্রশ্ন অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর> অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বই হল- কবি শ্রীরামকৃষ্ণ এবং বেদে

 

প্রশ্ন তিনি কোন্ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ?

উত্তর> অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কল্লোল পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

প্রশ্ন কবি গাছটিকে প্রথমে কেমন অবস্থায় দেখেছিলেন ?

উত্তর> কবি প্রথমে সবুজ প্রাণের লেশমাত্রও নেই, এমন জীর্ণ, শীর্ণ, রুক্ষ, শুষ্ক একটা গাছকে দেখেছিলেন।


প্রশ্ন “ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না। ওদিকে না যেতে চাওয়ার কারণ কী ? 

উত্তর> রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়া কয়েকজন বেকার বাউন্ডুলে ছেলে গাড়ি দেখলেই লিফট চাইবে বলে ড্রাইভার ওদিকে যেতে চায় না।

 

প্রশ্ন “তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে।”— সড়কের মাঝখানে, পথে এসে দাঁড়ানোর কারণ কী?

উত্তর> বেকার বাউন্ডুলে ছেলেদের জন্য ঘরে জায়গা নেই, খেলার জন্য মাঠ নেই, এমনকি আড্ডা দেওয়ার রোয়াকটা পর্যন্ত ডেঙে দেওয়া হয়েছে বলে তারা সড়কের মাঝখানে, পথে এসে দাঁড়িয়েছে।

প্রশ্ন “আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব।”- কবির 'খান' দিয়েই যেতে চাওয়ার কারণ কী?

উত্তর> কবির গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য ওটা শটকাট রাস্তা। বলে কবি ওখান দিয়েই যেতে চেয়েছেন।


প্রশ্ন “ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড়?”-ওখানে কীসের ভিড়।

উত্তর> রাস্তার একজন ভিখিরিকে একটা গাড়ি চাপা দিয়ে পালিয়েছে এবং সেই বেওয়ারিশ লাশ দেখার জন্য লোকের ভিড় জমেছে।

প্রশ্ন " কে সে লোক?” লোকটির পরিচয় দাও।

উত্তর> লোকটি একজন 'বেওয়ারিশ ভিখিরি'

প্রশ্ন “ চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে...” – কী বলে তারা সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল।

উত্তর> 'প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে বলে তারা সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল।

 

প্রশ্ন “আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি” কবি তাড়াতাড়ি নেমে পড়লেন কেন ?
উত্তর> গাড়ি-চাপা পড়া ভিখিরির দলা পাকানো লাশের রক্ত যাতে কবির জামাকাপড়ে না লাগে সেজন্য কবি তাড়াতড়ি ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়লেন।

 

প্রশ্ন "ফিরে আসতেই দেখি..”–ফেরার পথে কবি কী দেখতে পেলেন
উত্তর> ফেরার পথে কবি দেখলেন যাওয়ার সময় দেখা শুকনো গাছটা পাতায়, ফুলে, সুগন্ধে ভরে উঠেছে আর পাখিরা উড়ে এসে কলকাকলিতে জায়গাটা মাতিয়ে দিয়েছে।

 

প্রশ্ন "অবিশ্বাস্য চোখে দেখলুম”—কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর কেন ?

উত্তর> শুক্র, বৃক্ষ, প্রাণের লেশমাত্র নেই এমন গাছের কঙ্কালের মধ্যে অন্তহীন সবুজ প্রাণের বিকাশ দেখে কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর।

প্রশ্ন “ওই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।”—কবির যাত্রাপথের অভিজ্ঞতার বিবরণ দাও।

উত্তর> কবি ট্যাক্সিতে চেপে নিজের দরকারি কাজে যাচ্ছিলেন। গলির মুখে একটা প্রাণহীন শুকনো গাছ তিনি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। ড্রাইভার ওই পথে সামনের দিকে যেতে চাইছে না দেখে কবি কারণ জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে ড্রাইভার জানায় যে অদূরে রাস্তার মাঝখানে কিছু ছন্নছাড়া, বেকার, 'নেইরাজ্যের বাসিদে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কাছে গেলেই তারা লিফট চাইবে। ওই বাউন্ডুলে যুবকদের জন্য আছে ঘরে জায়গা, না রয়েছে খেলার মাঠ কিংবা আড্ডা দেওয়ার রোয়াক। কেউই তাদের সুনজরে দেখে না কারণ তাদের ভদ্রতা নেই, নেই বিনয় শালীনতা রীতিনীতি। কবির তাড়া ছিল বলেই সেই পথে যেতে চাইলেন। তাদের কাছে পৌঁছোতেই তারা ট্যাক্সি পাওয়ার আনন্দে চিৎকার করে উঠল। গাড়ি চাপা পড়া রক্তাক্ত দলা পাকানো এক বেওয়ারিশ ভিখিরির লাশ তুলে হাসপাতালের দিকে রওনা হল তারা। কবি নেমে পড়লেন ট্যাক্সি থেকে।

প্রশ্ন “গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া”-একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে বলেও কেন পরের পঙক্তিতে তাকে 'গাছের প্রেতচ্ছায়া' বলা হয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।

উত্তর> কবি দূর থেকে গাছের অবয়বটি দেখেছিলেন। কিন্তু কাছে এসে দেখেন সেটি একটি গাছের কঙ্কাল। তাতে না পাতা, ফুল, প্রাণের সামান্য আভাসও ছিল না। সেটি যেন ছিল শুকনো কাঠি উপরের দিকে তুলে দাঁড়িয়ে থাকা 'ছাল- বাকলহীন' একটা গাছের কাঠামো। তাই কবি তাকে গাছের প্রেতচ্ছায়া' বলেছেন।

প্রশ্ন “ইে পথ দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।”— এভাবে কবিতায় উত্তমপুরুষের রীতি কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, অন্তত পাঁচটি পক্তি উদ্ধৃত করে বুঝিয়ে দাও।

উত্তর> কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত তাঁর ছন্নছাড়া' কবিতায় উত্তমপুরুষের রীতি ব্যবহার করে কবিতার বক্তব্য বিষয় স্পষ্ট করে তুলেছেন পাঠকদের সামনে। উত্তমপুরুষের রীতি ব্যবহারের মাধ্যমে কবি নিজের অভিজ্ঞতার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছেন। যেমন— (ক) 'আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব', (খ) 'ওদের কাছাকাছি হতেই মুখ বাড়িয়ে/ জিজ্ঞেস করলুম, (গ) বললুম, কদ্দুর যাবে। তবে কবি কেবল নিজের বক্তব্যই উত্তম পুরুষে তুলে ধরেননি। বেকার বাউন্ডুলে ছন্নছাড়াদের মুখেও উত্তমপুরুষের রীতি ব্যবহার করে সমাজে তাদের মান্যতা দিয়েছেন। যেমন—(ক) 'পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি চল পানসি বেলঘরিয়া"। "আমরা খালি ট্যাক্সি খুঁজছি। আমাদের দলের কয়েকজন গাড়িটার পিছে ধাওয়া করেছে', ইত্যাদি।

 

প্রশ্ন “কারা ওরা?”—কবিতা অনুসরণে ওদের পরিচয় দাও ।

উত্তর> কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের 'ছন্নছাড়া' কবিতায় "ওদের' পরিচয় দেওয়া হয়েছে ট্যাক্সি ড্রাইভারের জবানিতে। ওরা হল আমাদের সমাজের এক নেই রাজ্যের বাসিন্দে বেকার বাউন্ডুলে যুবকের দল। ওদের শালীনতা, ভদ্রতা, বিনয়, আইনকানুন মানার বালাই কিছুই নেই। ওদের জন্য কলেজে সিট নেই, চাকরি নেই, বাড়িতে ঘর নেই, খেলার মাঠ নেই, আড্ডা দেওয়ার রক নেই। সমাজের মতে ওদের নীতি বা আদর্শ বলে কিছু নেই, নেই কোনো ভবিষ্যৎ। কোনো গন্তব্য নেই বলেই তারা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয়।

 

প্রশ্ন “ঘেঁষবেন না ওদের কাছে।” – এই সাবধানবাণী কে উচ্চারণ করেছেন? 'ওদের' বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে? ওদের কাছে না ঘেঁষার পরামর্শ দেওয়া হল কেন?

উত্তর> ‘ছন্নছাড়া' কবিতার কথক যে ট্যাক্সি করে দরকারি কাজে যাচ্ছিলেন সেই ট্যাক্সির ড্রাইভার এই সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলেন।
ওদের বলতে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়া একদল বেকার বাউন্ডুলে ছেলেদের বোঝানো হয়েছে ওদের কোনো বর্তমান নেই, নেই কোনো নীতি, আদর্শ বা ভবিষ্যৎ যাদের কথা বলা হয়েছে সেই ছন্নছাড়া বেকার যুবকরা বিনয়-ভদ্রতাহীন, নীতি-আদর্শহীন, ঘরে-বাইরে জায়গাহীন। তাই তারা রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আড্ডা মারে। কাছ দিয়ে গাড়ি গেলে তাকে থামিয়ে লিফট চায় হাওয়া খাবে বলে। তাই ড্রাইভার তাদের কাছে না ঘেঁষার পরামর্শ দিয়েছেন কবিকে।

প্রশ্ন “তাই এখন এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে।”— এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের জীবনের এমন পরিণতির কারণ কবিতায় কীভাবে ধরা পড়েছে তা নির্দেশ করো।

উত্তর> অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত 'ছন্নছাড়া কবিতায় রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়া একদল বেকার বাউন্ডুলে যুবকের কথা বলা হয়েছে এখানে।
>  বর্তমানে সমাজব্যবস্থায় এই বেকার ছেলেগুলি কলেজে পড়ার সুযোগটুকু পর্যন্ত পায় না, খেলার জন্য মাঠ পায় না, বাড়িতে ঘর পায় না, পাড়ায় তাদের আড্ডা দেওয়ার মতো রোয়াক থাকে না। ওদের বর্তমান কিংবা ভবিষ্যৎ বলতে কিছু নেই। ওদের মধ্যে যে সম্ভাবনার বীজ ছিল তা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। তাই ওরা আজ নেমে এসেছে রাস্তার মাঝখানে। 

প্রশ্ন "জিজ্ঞেস করলুম, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে?”— প্রশ্নবাক্যটিতে প্রশ্নকর্তার কোন্ অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে? তাঁর এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার পর কীরূপ পরিস্থিতি তৈরি হল ?

উত্তর> অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের 'ছন্নছাড়া' কবিতায় কথকের ট্যাক্সি ড্রাইভার বেকার যুবকদের যে অর্থে ছন্নছাড়া বলেছেন, কথক সেই চোখে তাদের দেখেননি তাই তাদের প্রতি কথকের সহানুভূতির প্রকাশ ঘটেছে উদ্ধৃত প্রশ্নবাকাটিতে

 ॥> কথকের প্রশ্ন শুনে তারা সমস্বরে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটাল চিৎকার করে তারপর তিন জন যুবক ট্যাক্সিতে উঠে পড়ল তারা কোথায় যাবে সে সম্বন্ধে কথক জিজ্ঞাসা করলেন তারা অদূরে জমে থাকা একটা ডিড়ের প্রতি নির্দেশ করে ভিড়ের কাছাকাছি পৌঁছোনোর পর তাদের একজন গাড়ি চাপা পড়া রক্তাত্ত দলা পাকানো একটা ডিখিরিকে কোলপাঁজা করে ভিতরে তুলে নেয় কথক নিজের জামাকাপড়ে রক্তের দাগ লাগা থেকে রক্ষা পেতে ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়েন

প্রশ্ন “প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে।”—এই দুর্যর আশাবাদের 'গুপ্ত শঙ্খধ্বনি' কবিতায় কীভাবে বিঘোষিত হয়েছে আলোচনা করো।

উত্তর> কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের 'ছন্নছাড়া কবিতায় নেই রাজ্যের বাসিন্দা বেকার বাউন্ডুলে যুবকরা সমাজে ছন্নছাড়া হিসেবেই বিবেচিত হয়। তাদের জন্য সমাজে কোনো কিছুই নেই। তাই তারা রুক্ষ, শুষ্ক, অশালীন, দুর্বিনীত। কিন্তু এই আপাত রুক্ষ, শুষ্ক, কঠোর বাউন্ডুলে যুবকদের মাধ্যমেই প্রাণের, প্রেমের মৃত্যুঞ্জয়ী আশাবাদ ঘোষণা করেছেন কবি। রাস্তার এক ভিখিরিকে গাড়ি চাপা দিয়ে মাংসপিন্ডে পরিণত করে পালিয়ে যায় কোনো এক গাড়ির ড্রাইভার। বেওয়ারিশ নিরীহ এই ভিখারির প্রাণ বাঁচিয়ে তুলতে প্রয়াসী হয় এই ছন্নছাড়া যুবকরা। চারপাশের আশাহীনতা, প্রতিবন্ধকতা এবং দলা পাকানো মাংসপিন্ডের মধ্যেও তারা প্রাণের খোঁজ করে। কবির কাছ থেকে ট্যাক্সি পেয়ে তারা আনন্দে উল্লসিত হয়ে ওঠে। দলা পাকানো রক্তাক্ত ভিখারিটাকে কোলপাঁজা করে ট্যাক্সিতে তোলার সময় তারা চিৎকার করে ওঠে 'প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে। তাদের এই ইতিবাচক মানসিকতার প্রতিফলন ঘটে কবিতার শুরুতে বর্ণিত প্রাণহীন শুকনো কঙ্কালসার গাছটি পাতা ও ফুলে ভরে ওঠায়। সকল প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ঘোষিত হয় প্রাণের অমর বাণী। মনুবার মরে যায় না, হারিয়েও যায় না। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রাণকে বাঁচিয়ে রাখার দুর্যর তাগিদ চারিয়ে যায় ইট, কাঠ, পাথরের গড়া হৃদয়হীন সমাজের বুকে।

 

প্রশ্ন কবিতায় নিজের ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে চাওয়া মানুষটির 'ছন্নছাড়া'দের প্রতি যে অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে তা বুঝিয়ে দাও।

উত্তর> 'ছন্নছাড়া' কবিতার কথক নিজে ভদ্র, শালীন, শিক্ষিত সভ্য সমাজের প্রতিনিধি। তাই ছন্নছাড়া যুবকের দল যখন বেওয়ারিশ ভিখিরির রক্তাক্ত দেহ ট্যাক্সিতে তুলে তাকে বাঁচিয়ে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, ভদ্র ও সভ্য কথক তখন নিজের জামাকাপড় বাঁচাতে এবং পরিস্থিতির সমস্যা থেকে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছেন। তবে এইসব বেকার বাউন্ডুলেদের প্রতি তিনি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন। তাঁর মনে হয়েছে চারপাশের এত বাধাবিপতি এবং আশাহীনতার মধ্যেও তাদের মনুষ্যত্ববোধ অমলিন যা তথাকথিত ভদ্র-সভ্য মানুষদের মধ্যে অনুপস্থিত। তাই এইসব নেই রাজ্যের বাসিন্দারাই পারে এক বেওয়ারিশ ভিখিরির প্রাণ বাঁচিয়ে তোলার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে।

 

প্রশ্ন কবিতায় 'গাছটি' কীভাবে প্রাণের প্রতীক হয়ে উঠেছে তা আলোচনা করো।

উত্তর> ‘ছন্নছাড়া' কবিতায় কবি কবিতার শুরুতে এবং শেষে, দু-বার গাছটির প্রসঙ্গ এনেছেন। কবিতার শুরুতে গাছটি ছিল শুকনো প্রাণহীন কঙ্কালসার বাস্তবের প্রতীক। তার ফুল পাতা বাকল কিছুই ছিল না,যেন গাছের 'প্রেতচ্ছায়া'। কিন্তু যখন একদল বেকার বাউন্ডুলে প্রায়-লাশে পরিণত হওয়া এক বেওয়ারিশ ডিখিরির প্রাণ বাঁচিয়ে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে, তখন ইট-কাঠ-পাথরে গড়া হৃদয়হীন সমাজের 'প্রেতচ্ছায়া'-তেও যেন প্রাণের স্পন্দন অনুভূত হয়।

তাই কবিতার শেষে 'প্রেতচ্ছায়া' গাছটি ভরে ওঠে সবুজ করি পাতায়, ফুলে, সৌরভে, সরসতায়। তাই প্রথমে গাছটি ছিল রুক্ষ বাস্তবের আশাহীন প্রাণের প্রতীক, আর পরিণতিতে সেটি হয়ে ওঠে আশাবাদ এবং প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ের প্রতীক।

 

প্রশ্ন “এক ক্ষয়হীন আশা এক মৃত্যুহীন মর্যাদা।" প্রাণকে কবির এমন অভিধায় অভিহিত করার সংগত কারণ নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ করো।

উত্তর> 'ছন্নছাড়া' কবিতায় কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত 'প্রাণ'- কে দুটি অভিধায় অভিহিত করেছেন। 'এক ক্ষয়হীন আশা এবং এক মৃত্যুহীন মর্যাদা'। এই দুটি সত্যকে বোঝানোর জন্য কবি একটি প্রাণহীন কঙ্কালসার গাছ এবং রুক্ষ, আপাত কঠোর, বেকার, বাউন্ডুলে যুবকদের প্রসঙ্গ কবিতায় এনেছেন। সমাজ যেসব ছন্নছাড়া যুবকদের মধ্যে ভদ্রতা, শালীনতা, সৌজন্যবোধ আশা করে না তারাই 'প্রাণ আছে' ঘোষণার মাধ্যমে অক্ষয় আশার আলো জ্বালিয়ে রাখে। তারাই প্রায় লাল হয়ে যাওয়া এক বেওয়ারিশ ভিখারির প্রা বাঁচানোর তৎপর হয়,সন্ধান দেয় মৃত্যুহীন মর্যাদাপূর্ণ এক প্রাণের। কবিতার শুরুতে যে গাছের বেঁচে ওঠার সামান্যতম আশাও ছিল না, কবিতার শেষে প্রাণের ফল্গুধারা থেকে বেরিয়ে এসে পাতায় ফুলে, সুগন্ধে ভরে ওঠে। তাই প্রাণের জন্য অভিধা দুটির সংগত কারণ রয়েছে।



  https://t.me/eparasona

https://www.facebook.com/eparasona/

Post a Comment

0 Comments