নিখিল-বঙ্গ কবিতা-সঙ্ঘ । নলিনি দাশ । আলোচনা । প্রশ্ন উত্তর । Nikhil Banga Kabita Sangha by Nalini Das । class 8 । সহায়িকা বিষয়সংক্ষেপ । বিষয়বস্তু । অষ্টম শ্রেণি ।
নামকরণ >>।
সাহিত্যে নামকরণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ শিরোনামের মধ্যে দিয়েই
বিষয়বস্তু সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা লাভ করা যায়। স্কুলের
বোডিং হাউসে গন্ডালু দলের সদস্যরা কিভাবে ‘কবিতা সংঘ’ গড়ে তুলেছিল তারই সুন্দর বর্ণনা রয়েছে আলোচ্য রচনায়। লেখিকা এখানে নিজের স্কুলজীবনের অভিজ্ঞতার সাহায্যে খুবই সুন্দরভাবে
রচনাটি সাজিয়ে তুলেছেন। বড় মিস
বিশ্বাসের সংস্কৃত ব্যাকরণের ক্লাসে নিছক মজা করেই মেয়েদের পদ্য রচনা সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীকালে তা থেকেই সৃষ্টি
হয় নিখিল–বঙ্গ–কবিতা–সংঘ। নিখিল–বঙ্গ– কবিতা–সংঘের প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল
গোপনে, গভীর রাতে। কিন্তু অনিমাদি, মনিকাদি, হিরণদি এমনকি বিশ্বাস স্নেহমাখা প্রশ্রয়ে,
গণ্ডালু–সহ উনিশ জন ছাত্রীর উৎসাহ আর উদ্দীপনায়, খাবার ঘরে উৎসব পালনের মাধ্যমেই সকলের সামনে তা
অনুষ্ঠিত হয়। পরে ঠিক হয় যে প্রতিদিন
সকালে ও সন্ধ্যায় ১৫ মিনিট করে পড়ার সময় বাড়িয়ে দিয়ে প্রতি
শুক্রবার সন্ধ্যায় বসবে সাহিত্যসভা,
গান, বা অভিনয় জাতীয় কোন কিছুর আসর। গল্পের সমস্ত ঘটনাই নিখিল–বঙ্গ–কবিতা–সংঘ ও তার সদস্যদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। তাই শিরোনামটি যথাযথ ও সার্থক হয়েছে বলা যায়।
সারসংক্ষেপ >>
বোডিং স্কুলের মেয়েরা সকলে বড় মিস বিশ্বাসের সংস্কৃত ব্যাকরণের ক্লাসে
একঘেয়েমি কাটাতেই লুকিয়ে কবিতা লেখা শুরু করে। আর তা থেকেই গড়ে ওঠে নিখিল–বঙ্গ–কবিতা–সংঘ। সংঘের প্রথম অধিবেশন করার সময় ঠিক হয় মাঝরাত। আর স্থান বোডিং এর খাবার ঘর। মাঝরাতে ১৯ জন সদস্য চুপিচুপি বোডিং এর খাবার ঘরে ঢুকেই হতভম্ব হয়ে দাঁড়ালো। কারন ইস্কুলের দিদিমনিরা ইতিমধ্যেই সেখানে সভা করার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন।
দিদিমণিদের উপস্থিতিতেই কবিতা সংঘের প্রথম সভা শুরু হয়। সেই সভা শেষ হওয়ার কয়েক দিন পর শিক্ষিকারা সিদ্ধান্ত
নেন যে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় পনের মিনিট করে পড়ার সময়
বাড়ানো হবে। তার বদলে শুক্রবার সন্ধ্যায় বসবে সাহিত্য সভা, গান, ও অভিনয় জাতীয় কিছু আসর। অনিমাদি ছাত্রীদের পরামর্শ দেন তারা যাতে লেখালেখির অভ্যাস বন্ধ না করে। মনিকাদি রচনায় বৈচিত্র আনার কথা বলেন। দিদিমণিদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় ছাত্রীদের মধ্যে যে চেপে গেল আরো ভালো করে
সাহিত্য সভা গড়ে তোলার। প্রতি সপ্তাহে সাহিত্য সভার অধিবেশন
বসল। পত্রিকা বের হল। ক্লাসের সব
মেয়েরা তাতে অংশগ্রহণ করল। মেয়েদের লেখার উন্নতি হতে লাগলো।
ব্যাকরণ ও নির্মিতি >>।
শব্দার্থ >>।
॥• ঘনিয়েছে => জমেছে
॥• প্রাণপণে => যথাসাধ্য
॥• হাই => অলসতা বা ঘুম পাওয়ার কারণে হাঁ করা
॥• প্রতীক্ষায় => অপেক্ষায়
॥• দলা পাকানোর => দুমড়ে মুচড়ে দলা করা
॥• গন্ডালু => চারজন ‘লু’ মালু, কালু, বুলু, টুলু
॥• দ্বন্দ্ব => বিবাদ
॥• মেলে => পেতে
॥• পদ্ম => ছন্দবদ্ধ রচনা
॥• পত্তর => চিঠি
॥• সত্বর => তাড়াতাড়ি
॥• সাজসজ্জা => সাজগোজ
॥• উনবিংশতি => উনিশ
॥• ছত্র => সারি
॥• শরমেতে => লজ্জায়
॥• লোর => চোখের জল
॥• গাব => গাইব
॥• দুর্বিসহ => সহ্য যায় না এমন
॥• অদ্য => আজ
॥• রঙ্গে => রসিকতায়
॥• সন্তর্পনে => সাবধানে
॥• বোর্ডার => আবাসিক
॥• মেম্বার => সদস্য
॥• কোশে => তহবিলে
॥• ক্ষ্যান্ত => মুক্তি, ছাড়ানো
॥• হদ্দ => নাকাল
॥• বিরসবদনে => মলিনমুখে
॥• ডরমিটরি =>
(ইংরেজি শব্দ) একসঙ্গে অনেক মানুষের শোবার ঘর
॥• নিঝুম => নিস্তব্ধ
॥• সাংকেতিক => সংকেত-যুক্ত
॥• থমথম => হকচকানো
॥• স্তম্ভিত => অবাক বিস্ময়ে
॥• স্বপ্রতিভ => চটপটে
॥• কেরদানি => বাহাদুরী
॥• প্যারোডি => ব্যঙ্গ কবিতা
॥• ট্রেজারার => কোষাধক্ষ
॥• দুরুদুরু => কম্পিত
বিপরীত শব্দ
॥• উজ্জল => নিষ্প্রভ
॥• প্রশংসা => তিরস্কার
॥• পাস => ফেল
॥• সত্বর => দেরি
॥• সত্যি => মিথ্যা
॥• অস্বাভাবিক => স্বাভাবিক
॥• দিন => রাত
॥• ভীতু => সাহসী
॥• জন্ম =>
মৃত্যু
॥• পদ্য => গদ্য
॥• প্রশ্ন => উত্তর
॥• গুণ => দোষ
॥• অন্ধকার => আলো
বাক্য রচনা
॥• প্রাণপণে => সে প্রাণপণে ছুটেও সময়মতো ট্রেন ধরতে পারল না।
॥• সংবর্ধনা => অফিসের পক্ষ থেকে তাকে বিদায় সম্বর্ধনা
জানানো হলো।
॥• অধিবেশন => আজ ক্লাবের বার্ষিক অধিবেশন।
সন্ধি বিচ্ছেদ করো
প্রতীক্ষা, পরীক্ষা, সপ্তাহ, আশ্চর্য,
বিক্রমাদিত্য, বৃষ্টি, কোশাধক্ষ, পরস্পর, উচ্চারণ, নিশ্চয়, নিরুদ্দেশ
॥• প্রতীক্ষা => প্রতি + ইক্ষা
॥• পরীক্ষা => পরি + ইক্ষা
॥• সপ্তাহ => সপ্ত + অহ
॥• আশ্চর্য => আঃ + চর্য
॥• বিক্রমাদিত্য => বিক্রম + আদিত্য
॥• বৃষ্টি => বৃষ + তি
॥• কোশাধক্ষ => কোশ + অধক্ষ
॥• পরস্পর => পর + পর
॥• উচ্চারণ => উৎ + চারণ
॥• নিশ্চয় => নিঃ + চয়
॥• নিরুদ্দেশ => নিঃ + দেশ
দল বিশ্লেষণ করো এবং (রুদ্ধদল) ও (মুক্তদল) চিহ্নিত করো >>।
হাততালি, সংস্কৃত, সন্দেশ, বিক্রমাদিত্য, সাংকেতিক
॥• হাততালি => হাত্ (রুদ্ধদল) তালি (মুক্তদল)
॥• সংস্কৃত => সং (রুদ্ধদল) স্কৃত (মুক্তদল)
॥• সন্দেশ => সন্ (রুদ্ধদল) দেশ (রুদ্ধদল)
॥• বিক্রমাদিত্য => বিক্ (রুদ্ধদল) র (মুক্তদল) মা (মুক্তদল) দিত্ (রুদ্ধদল) ত (মুক্তদল)
॥• সাংকেতিক => সাং (রুদ্ধদল) কে (মুক্তদল) তিক্ (রুদ্ধদল)
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন॥ বড়ো মিস বিশ্বাস ক্লাসে কি পরাচ্ছিলেন ?
উত্তর ॥> সংস্কৃত পরাচ্ছিলেন।
প্রশ্ন॥ নিখিল–বঙ্গ–কবিতা–সংঘ এর সদস্যরা কারা ছিলেন ?
উত্তর ॥> গণ্ডালু অর্থাৎ মালবিকা মজুমদার (মালু), কাকলি চক্রবর্তী (কালু), বুলবুলি সেন (বুলু),
লেখিকা (টুলু) এই চার জন ছিল প্রধান। এছারা কাজল, বীণা, হাসি, নন্দিতা সহ বোর্ডিং
হাউসের মেয়েরা ছিল নিখিল–বঙ্গ–কবিতা–সংঘ এর সদস্য।
প্রশ্ন॥ “ ---
এক খানা দলা পাকানো কাগজ আমার হাতে ঠেকল” – বক্তা কে ? কখন বক্তার হাতে তা ঠেকল
? দলা পাকানো কাগজে কি ছিল ?
উত্তর ॥> বক্তা হলেন নিখিল–বঙ্গ–কবিতা–সংঘ গদ্যাংশের
কথক টুলু বোস।
॥> মিস বিশ্বাসের সংস্কৃত ব্যাকরণের ক্লাসে সকলে ছুটির অপেক্ষায় বসে ছিল। এক ঘেয়ে
ক্লাসে প্রাণপণে হাই চেপে রাখছিল। এমন সময় ডেস্কের তলা দিয়ে দলা পাকানো একখানা
কাগজ কথকের হাতে ঠেকে।
॥> দলা পাকানো কাগজে ক্লাসের মেয়েরা পদ্য লিখে পাঠিয়েছিল।
প্রশ্ন॥ মালুর কবি খ্যাতি কীভাবে স্কুলে ছড়িয়ে পড়েছিল
?
উত্তর ॥> মালু অর্থাৎ মালবিকা মজুমদার একবার তার মাসির
বাড়ি গিয়েছিল। সেখান থেকে সে কালু অর্থাৎ কাকলি চক্রবর্তীকে পদ্যছন্দে একটি চিঠি
লিখেছিল। সেই থেকে মালুর কবি খ্যাতি সারা স্কুলে ছড়িয়ে পরে।
প্রশ্ন॥ গণ্ডালু দলের চার সদস্য কবিতা–সংঘ এর কোন কোন পদ লাভ করেছিল ?
উত্তর ॥> কাকলি চক্রবর্তী (কালু) সঙ্ঘের সভাপতি, বুলবুলি সেন (বুলু) সহকারী সভাপতি হয়েছিল। সঙ্ঘের সম্পাদক হয়েছিল মালবিকা মজুমদার (মালু), লেখিকা টুলু বোস (টুলু) হয়েছিলেন কোশাধক্ষ।
0 Comments